করোনা অতিমারি এবং পুঁজিবাদ (তৃতীয় পর্ব)

By : Update Study Group | : 12 May, 2021
করোনা অতিমারি এবং পুঁজিবাদ (তৃতীয় পর্ব)

করোনা অতিমারির ফলে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে সংকট আরও গভীর হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ১৯২৯ সালের পুঁজিবাদী মহামন্দা বিশ্ব জুড়ে যে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছিল এবারের সংকট নাকি তাকেও ছাপিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) জানিয়েছে এই বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সমগ্র বিশ্বে ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ শ্রমজীবীর কাজ চলে যাবে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ, ইউরোপে ১ কোটি ৫০ লক্ষ, আরব দেশগুলিতে ৫০ লক্ষ পূর্ণ সময়ের কাজ স্রেফ উবে যাবে। এমনকি উচ্চ আয়সম্পন্ন দেশগুলিতে দশ কোটি পূর্ণ সময়ের কাজ চলে যাবে অনুমান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিশ্ব জুড়ে লকডাউনের ফলে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চার জন বেকার হয়ে গেছে। (সূত্র ১) ভারতের সিএমআইই-র সর্বশেষ রিপোর্ট থেকে জানা গেছে দেশে ইতিমধ্যে ১৪ কোটি মানুষের কাজ চলে গেছে। (সূত্র ২) ভারতের ৪০ কোটি শ্রমজীবী ব্যাপক দারিদ্র্যে নিমজ্জিত হতে চলেছে। (সূত্র ৩) এর সঙ্গে যদি বুভুক্ষা ও অনাহারে মৃত্যু, অপুষ্টিজনিত মৃত্যু, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু, নিম্ন আয়সম্পন্ন দেশ/অঞ্চলগুলি থেকে নিঃস্ব নিরন্ন উদ্বাস্ত স্রোত, ইত্যাদি বিপর্যয়কে যুক্ত করা হয়, তবে সামগ্রিক সংকট খুবই ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়াবে এমন আভাস দেওয়া হচ্ছে।

১৯২৯ সালে বিশ্ব পুঁজিবাদ যখন গভীর সংকটে পড়েছিল, তখন সেই সংকট থেকে মুক্তি পেতে তারা তাদের সংকটের বোঝা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সমস্ত সংকটের সময় পুঁজিবাদ এই রাস্তাই নেয়। সুতরাং, এবারও বিশ্ব জুড়ে এবং ভারতবর্ষে পুঁজিবাদী বিশ্লেষক ও নীতিপ্রণয়নকারীরা 'বিপুল কাজ চলে যাবে, বুভুক্ষা দেখা দেবে' ইত্যাদি বিপদঘণ্টি বাজিয়ে প্রকৃত অর্থে শ্রমিক মেহনতী মানুষকেই কোমরে গামছা বাঁধার পরামর্শ দিতে শুরু করেছে। পুঁজিপতিদের নামকরা সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-কুইন্ট লিখেছে,

''করোনা ভাইরাস অতিমারির ফলে যে বিশাল অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে চলেছে, ভারতকে তার সুযোগ নিয়ে রুগ্ন ক্ষেত্রগুলিকে সক্ষম করে তোলা এবং দেশে বিদেশী বিনিয়োগ টানার জন্য ব্যাপক মাত্রার সংস্কার কর্মসূচী হাতে নিতে হবে।'' (সূত্র ৪, জোর আমাদের)

অর্থাৎ, অতিমারির সংকট পুঁজিপতিদের কাছে একটা সুবর্ণ ''সুযোগ'' ছাড়া আর কিছু নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রঘুরাম রাজনও বলেছেন, ''আশা করি এই অসহনীয় ট্র্যাজেডি... আমাদের রাজনীতিকে জরুরি অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক সংস্কারে মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে''। (পূর্বোক্ত) করোনা প্রাদুর্ভাবের অনেক আগে থেকেই ভারতে বড় রকমের মন্দা চলছিল। গত বছরের নভেম্বর মাসে জানা গেল, দেশে বেকারির হাল এতটাই সংকটজনক যে তা নাকি ৪৫ বছর আগেকার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। (সূত্র ৫) ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে ৯০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছে। (সূত্র ৬) আরও জানা গেল, খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের পিছনে মাথাপিছু খরচ ১৯৭২-৭৩ পর্যায়ের পর এই প্রথম নীচে নেমে গেছে। (সূত্র ৭) সব মিলে গরিব শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা কতখানি সঙ্গীণ তা সরকারি তথ্যেই সুস্পষ্ট। এরই মাঝে সরকার শ্রম আইন সংস্কারে তৎপর হয়ে উঠল। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে জলের দরে বেচে দেওয়া শুরু করল। ফলে আরও কয়েক হাজার তো বটেই, কয়েক লক্ষ কাজ চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল। নোটবন্দী ও জিএসটি চালু হওয়ার পর ক্ষুদ্র শিল্প যে ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল তা থেকে পরিত্রাণের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছিল না।

এমন অবস্থায় দেখা গেল করোনা অতিমারি যা কি না পুঁজিপতি শ্রেণির কাছে এক বিশেষ ''সুযোগ''। সরকারি হুকুমনামায় লকডাউন চলছে। কোটি কোটি শ্রমিক মেহনতী মানুষ হয় ঘরবন্দী অথবা ঘরে ফেরার মরিয়া প্রচেষ্টায় রত। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ তারা দেখাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা হল দেশে ফেরা কিংবা কোনও ক্রমে বেঁচে থাকার এক আকুল আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। বস্তুত, প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। এই সুবর্ণ ''সুযোগ''-এর সদ্ব্যবহার করতে ৮ মে দেশের পুঁজিপতিদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন সিআইআই, ফিকি, অ্যাসোচেম কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তাব দিল আগামী ২-৩ বছরের জন্য শ্রম-আইন স্থগিত রাখা হোক এবং সারা দেশ জুড়ে ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১২ ঘণ্টার শ্রমদিবস চালু করা হোক। (সূত্র ৮) ইতিমধ্যে কয়েকটা রাজ্য (একই মজুরির হারে) দৈনিক ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টার কাজের ফরমান জারি করেছিল। উপরাক্ত বৈঠকের পরই উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাট সরকার আগামী তিন বছরের জন্য শ্রম আইন বাতিল করে দিল। চরম হিংস্রতার সঙ্গে জানানো হল, যে কোনও শ্রমবিরোধ, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, স্বাস্থ্য ও শ্রম-পরিবেশ, ট্রেড ইউনিয়ন, কন্ট্রাক্ট শ্রমিক, পরিযায়ী শ্রমিক সংক্রান্ত কোনও আইন আগামী তিন বছর খাটবে না। বড়-মাঝারি-ছোট যে কোনও কারখানা/সংস্থা থেকে ইচ্ছামতো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে। (সূত্র ৯) এমনকি ন্যূনতম মজুরিও নাকি দাবি করা যাবে না। অন্যান্য রাজ্যও যে একই পথে হাঁটবে তার নানা ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, কর্নাটক, উত্তরাখণ্ড খুব শীঘ্রই একই পথে হাঁটতে চলেছে। উল্লাসের সঙ্গে একটি পত্রিকা সম্পাদকীয় কলমে লিখল, ওরা ''শ্রম-সংস্কার করে পথ দেখাচ্ছে''। (সূত্র ১০) ''লেবার ল সাসপেনশন: হিট দ্য ওয়ার্কার্স হোয়েন দে আর ডাউন'' নামক প্রবন্ধে বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন লিখলেন, ''আমি প্রকৃতপক্ষে সর্বাত্মকভাবে ঢেলে সাজানোর পক্ষে।... (কিন্তু) অতিমারির আড়াল থেকে একপাক্ষিকভাবে শ্রম-সুরক্ষার উপর কোপ বসালে... অবিশ্বাস ও শ্রম-বিক্ষোভ জন্ম নেবে।'' (সূত্র ১১)

শ্রমিকদের মজুরি-দাস অবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে দাসে পরিণত করা অথবা শ্রমিকদের জবাই করার মানসিকতা নিয়ে শ্রমসংস্কারে নেমে পড়লে যে 'অশান্তি' সৃষ্টি হতে পারে সে বিষয়ে পুঁজিপতি শ্রেণির সরকারগুলোকে সতর্ক করার জন্যই প্রণববাবু কলম ধরেছেন। বস্তুত, শাসকবর্গ এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছে। কীভাবে শ্রমিক বিক্ষোভ সহ নানা জাতীয় বিক্ষোভের সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা যায় তার প্রস্তুতি তারা পূর্ণ গতিতে নিচ্ছে।

দেশের শাসকরা পুঁজিপতি শ্রেণি ও জমিদার-জোতদার সহ সমাজের যে যে অংশের প্রতিনিধিত্ব করে তারা হল গ্রামীণ ও শহুরে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের একটা বিরাট অংশ – যাদের মধ্যে পড়ে উচ্চবর্ণ হিন্দু, বিশেষত ব্রাহ্মণ ও বানিয়া বা ব্যবসায়ী, ছোট-বড় দোকানদার; এমনকি শূদ্র (ওবিসি) জনগণের অর্থনৈতিকভাবে উপরের একটি স্তরও তাদের অন্যতম ভিত্তি। দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করার সময়ে তারা যেমন পুঁজিপতি-জমিদার ও বিত্তবানদের কাছে দায়বদ্ধ, তেমনই তারা দায়বদ্ধ উচ্চবর্ণ হিন্দুদের কাছে। পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থে নানা রকম সংস্কার, ছাড়, ব্যাপক মুনাফা, পরিবেশ আইন শিথিলকরণ (যা লকডাউন পর্বে আরও শিথিল করার ফন্দি আঁটা হয়েছে), জল-জমি-জঙ্গল থেকে উচ্ছেদ, তথাকথিত উন্নয়ন, শ্রমিকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দমনে তারা নিবেদিতপ্রাণ; আবার, হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শে জারিত ফ্যাসিবাদী শাসন স্থাপনার্থে তারা দৃঢ়সংকল্পিত। ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার পথে সম্ভাব্য সমস্ত বিরোধীদের কণ্ঠরুদ্ধ করার ব্যাপারেও তারা অত্যন্ত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা যাদের বিরোধী মনে করে তাদের অন্যতম হল সমগ্র মুসলমান সম্প্রদায়, দলিত-আদিবাসী জনগণ এবং শ্রমজীবী মানুষ; এছাড়া আছে পোষ না মানা কিছু বুদ্ধিজীবী, ঐতিহাসিক, শিক্ষাজীবী, ছাত্রছাত্রীদের একাংশ – অবৈজ্ঞানিক চেতনা, কুসংস্কার, অতীতের 'হিন্দু' পুরাণের গৌরবগাথা, গোমাতার বন্দনায় যাদের মোহিত করা যায়নি। বস্তুত, কীভাবে এদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করা যায় সে ব্যাপারে শাসকদের অস্ত্রশস্ত্রের তথা প্রস্তুতির কোনও অভাব নেই।

করোনা অতিমারির সময়, গত ৬ এপ্রিল চালু করা হল আরোগ্য সেতু নামক একটি অ্যাপ যা স্মার্ট ফোনে চলবে। এই অ্যাপ সবাইকে সঙ্গে রাখতে হবে, তাতে ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য দিতে হবে, ফোনের ব্লুটুথ ও জিপিএস সব সময়ে খোলা রাখতে হবে – এমনই ফরমান দেওয়া হয়েছে। এর সাহায্যে করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি এলে ফোনে সংকেত আসবে, সেই সংকেত চলে যাবে সরকারের কাছে, সরকার জানতে পারবে কারা আক্রান্ত, কারা কোয়ারান্টিনে আছে এবং তারা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছে কি না, ইত্যাদি। ভারতে ৩৭ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের হাতে স্মার্ট ফোন আছে। (সূত্র ১২) এদের সবাই সরকারের নির্দেশ মোতাবেক চললে এক বিপুল অংশ, শহরবাসী ও মূলত স্বচ্ছল একটা অংশকে যে মনিটরিং করা যাবে তা অত্যন্ত স্পষ্ট। এমনকি কার কত রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ কত, কার হৃৎযন্ত্র কতটা সবল তাও নাকি মনিটর করা যাবে। কিন্তু এই অ্যাপ একই সাথে নাগরিকদের উপর নজরদারির হাতিয়ার কি না এমন প্রশ্ন উঠে গেছে। এই অ্যাপ তৈরি করেছে প্যারিসের সাইবার-সিকিউরিটি কনসালটেন্সি ডিফেনসিভ ল্যাব এজেন্সি। ফলে বিদেশীদের হাতে নজরদারির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। (সূত্র ১৩) সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণ জানিয়েছেন এই অ্যাপ না কি ''পুরোপুরি বেআইনি''। (সূত্র ১৪)

নজরদারি করা হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন বা সংশয় ওঠা কি অন্যায্য? যেমন ধরা যাক কর্নাটকের কথা। সেখানে সরকার স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে ''কোয়ারান্টিন ওয়াচ'' অ্যাপ। সকাল সাতটা থেকে রাত নটা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় সেলফি তুলে সরকারকে তাদের নির্দিষ্ট অবস্থান জানাতে হচ্ছে। তেলেঙ্গানার কয়েকটি পৌরসংস্থা এমন একটি অ্যাপ চালু করেছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল ফোনকে সক্রিয় করে তুলছে, পর্যায়ক্রমে লোকজনকে একটি ফর্ম ভরতে হচ্ছে, সেলফি পাঠাতে হচ্ছে। কেরালায় চলছে ''ভাইরাস ডিটেকটিভ'' যা স্ক্যান করা সিসিটিভি থেকে ছবি নিয়ে রুগীদের চলাফেরা নিরীক্ষণ করছে। শ্রীনগর, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাবেও মোটামুটি একই পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছে। (সূত্র ১৫) মধ্যপ্রদেশে ৫৪০০ জনের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে গেছে, এমনকি সরকারের ওয়েবসাইটে তা শোভিত হচ্ছে! (সূত্র ১৬) প্লেনের যাত্রীদের আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করা বাধ্যতামূলক করা হবে এমন প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। বস্তুত সরকারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন উঠছে কেননা সদ্য অতীতে সরকারের পক্ষ থেকে দেশের জনগণকে মনিটরিং করা, তার যাবতীয় তথ্য মজুত করা, এমনকি তা বেসরকারি হাতেও চলে যাওয়ার দৃষ্টান্ত আছে। শোনা যাচ্ছে বিশ্বের নানা দেশেও, যেমন, দঃ কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, ইজরায়েল, তাইওয়ান, পোল্যান্ড, ইত্যাদি দেশেও সরকার থেকে কড়া নজরদারি চলছে। তবে সে অন্য প্রসঙ্গ, অন্য আলোচনা।

ভারতে নজরদারির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে করোনা প্রাদুর্ভাবের বেশ আগে। বিজনেস স্টান্ডার্ডের একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, কয়েক মাস আগে সরকার ন্যাশনাল অটোমেটেড ফেসিয়াল রেকগনিশন সিস্টেম (NAFRS) ব্যবহার করা শুরু করেছে যার মাধ্যমে যে কোনও ব্যক্তির সচিত্র পরিচয়পত্র, সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি, সিসিটিভি ও ভিডিও থেকে প্রাপ্ত চিত্রের, এমনকি শরীরের কোনও উল্কি, কাটা দাগ থেকে তাকে চিহ্নিতকরণ করা যায়। এর ফলে সরকারের হাতে থাকবে নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির মুখচ্ছবি, মুখমণ্ডলের পার্শ্বচিত্র। (সূত্র ১৭) যে কোনও জনসভা, মিছিল, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীকে খুব সহজেই এর ফলে চিনে ফেলা যাবে। প্রকৃতপক্ষে, এর প্রয়োগও শুরু হয়ে গেছে। যেমন ২০১৯-এর ২২ ডিসেম্বর দিল্লির রামলীলা ময়দানে নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় ''রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জনতাকে উত্তেজিত করা দুষ্কৃতীদের'' চিহ্নিত করার জন্য দিল্লি পুলিশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। (সূত্র ১৮) লাইভমিন্ট নামক মিডিয়া দিল্লি দাঙ্গায় কীভাবে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা হয়েছে তার জন্য RTI করলে এবং সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি থেকে জানা যায় যে, সরকার উপরোক্ত 'ফেসিয়াল রেকগনিশন' প্রযুক্তি এবং নির্বাচনী পরিচয়পত্র, ড্রাইভার লাইসেন্স ব্যবহার করে ১১০০ জনকে চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে ৩০০ জন উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য হল, সুপ্রিম কোর্টের এক আইনবিদের মতে এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে 'অপরাধী' চিহ্নিতকরণ দেশে বেআইনি। (সূত্র ১৯)

প্রকৃতপক্ষে, বিরোধী যে কোনও ব্যক্তিকে 'সন্দেহভাজন', 'অপরাধী' সাব্যস্ত করে তার যাবতীয় তথ্য ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছে বহু-বিতর্কিত আধার কার্ড। আধার কার্ডের আপাত উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত গরিবের হাতে যাতে ভরতুকির খাদ্যশস্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছায়, দুর্নীতি বন্ধ হয়, ইত্যাদি। এর জন্য সমস্ত নাগরিকের বায়োমেট্রিক তথ্য – যেমন পাঁচ আঙুলের ছাপ, চোখের মনির চিত্র তোলা হল। নাগরিকবৃন্দের ঠিকুজিকুষ্ঠি সরকারের ঘরে জমা পড়ল। নির্দিষ্ট গরিবজনের হাতে ভরতুকির চাল-গম-কেরোসিন পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব নাগরিকের বায়োমেট্রিক তথ্য কেন দরকার তা হয়তো অনেকেরই তখন বোধগম্য হয়নি। যাই হোক, আমেদাবাদ ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের শিক্ষক রীতিকা খেরা জানিয়েছেন, আধার আইনের ৭ নং ধারার বলে সরকার যে কোনও পূর্ণাঙ্গ নজরদারির কাজে এখন আধার কার্ডের ব্যবহার করতে পারে। এমনকি কে কী খায়, কোথায় যায়, কার সঙ্গে দেখা করে, কে কী কেনে, কোথায় বেড়াতে যায়, কার কত ঋণ, তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, তার খরচের হাত কেমন, ইত্যাদি নানাবিধ ব্যক্তিগত তথ্য সরকারের কাছে গচ্ছিত আছে এবং চাইলেই সরকার তা ব্যবহার করতে পারে। উপরন্তু, আধার পঞ্জীকরণের সময় যে সব ভলান্টিয়ার নিযুক্ত হয়েছিল তারা কেউই এখন আধার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত নেই। তারা এখন নানা ব্যবসায়ী সংস্থায় যুক্ত। ফলে নাগরিকের তথ্যাবলী যে এখন বেসরকারি হাতে চলে গেছে উক্ত শিক্ষক সে ব্যাপারে নিশ্চিত। (সূত্র ২০) হাফিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, অসমে এনআরসি প্রক্রিয়ার সময় সমস্ত আবেদনকারীর আধার-তথ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক বিভাগের কাছে চলে গেছে। এর মাধ্যমে কোনও সন্দেহভাজন 'বেআইনি অনুপ্রবেশকারী' অন্য রাজ্যে চলে গেলেও তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব। সে যাতে ঐ রাজ্যে সরকারি পরিষেবা না পায় তারও ব্যবস্থা করা সম্ভব। (সূত্র ২১) ফলে নাগরিকদের উপর নজরদারি, গোয়েন্দাগিরি চালানো এখন সরকারের কাছে, পুলিশ-প্রশাসনের কাছে নিতান্তই ছেলেখেলা।

সম্ভবত এর থেকেও বিপজ্জনক কিছুর প্রস্তুতি চলছে। ২০১১ সালে ইউপিএ সরকার যে সামাজিক-অর্থনৈতিক সুমারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল – যার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল আধার প্রকল্পর মতোই, অর্থাৎ সরকারের কর্মসূচীগুলি যাতে গরিবের হাতে পৌঁছায় – সেই প্রকল্পকে এখন প্রসারিত করে তৈরি করা হয়েছে ন্যাশনাল সোশ্যাল রেজিস্ট্রি সিস্টেম। হাফিংটন পোস্ট RTI করে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, এর মাধ্যমে কোনও নাগরিক এক শহর থেকে অন্য শহরে গেলে, চাকরি পরিবর্তন করলে, নতুন সম্পত্তি কিনলে, তার পরিবারে নতুন শিশু জন্মালে বা কারও মৃত্যু হলে, কারও বিবাহ হলে এবং সে শ্বশুরবাড়ি গেলে, ইত্যাদি তথ্য এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকারের সহজলভ্য হয়ে উঠবে। প্রকল্পটি চালু হতে চলেছে ২০২১ সালে এবং এই প্রকল্পের সঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্কও জড়িত আছে যারা ২০ লক্ষ ডলার অনুদান দিয়েছে। এর ফলে 'যা কিছু আজ ব্যক্তিগত' তা যেমন সরকারের বা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে জমা থাকবে, তেমনই এর সঙ্গে আধার তথ্য সংযুক্ত করে পাওয়া যাবে এক বিশাল তথ্যভাণ্ডার যার মাধ্যমে দেশের ১৩০ কোটি নাগরিকের (তা তিনি উচ্চবর্ণ হিন্দু হন, বা শূদ্র-অতিশূদ্র, আদিবাসী কিংবা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত, কিংবা 'জাতীয়তা-বিরোধী', 'অনুপ্রবেশকারী' যেই হোক না কেন) অনুসৃত ধর্ম, জাত, মাসিক উপার্জন, সম্পত্তি, শিক্ষা, বিবাহিত কি না, কী কাজ করেন, বিকলাঙ্গ কি না, এবং সামগ্রিক বংশলতিকা সরকার নিয়মিতভাবে মনিটর করতে পারবে। এইভাবে দেশে প্রস্তুত হচ্ছে এক গণ-নজরদারির ব্যবস্থা যার ফাঁক দিয়ে মাছিও গলতে পারবে না। উপরন্তু, প্রাপ্ত তথ্যাবলী বিদেশী সংস্থার হাতে মজুত থাকবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। (সূত্র ২২) এছাড়া আসছে প্রাইভেসি বিল যা নাকি ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার নামে যাবতীয় ব্যক্তিগত নথি সরকারের ঘরে সংরক্ষিত করার নয়া আইন! (সূত্র ২৩)

প্রকৃতপক্ষে, শ্রমজীবী সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভকে দমন করা, প্রতিটি নাগরিকের উপর নজর রাখা, তার উপর খবরদারি চালানোর এক গণ-ব্যবস্থা উদ্ভূত হচ্ছে। শ্রম আইন বাতিল বা পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কোন শ্রমিক বা শ্রমিক-নেতা একটু বেশি সক্রিয়, কারা নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে একটু বেশি সোচ্চার, কারা সরকারের অনুসৃত নীতিগুলোকে মানতে না পেরে অন্যজনকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে, 'কে ভারত মাতা কি জয়' বা 'বন্দে মাতরম' শ্লোগানে গলা মেলাতে নারাজ, কে অতীত হিন্দু গাথা-কাহিনীতে মুগ্ধ হচ্ছেন না, ইত্যাদি নানাবিধ ক্ষোভ-আপত্তি-বিরোধিতাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করার জন্য উপরওয়ালারা প্রস্তুত। জার্মানিতে বিশেষ বিশেষ টার্গেটদের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বর্বর অবস্থার মধ্যে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এখন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি অনেকটা এগিয়ে গেছে। ফলে এখন গোটা দেশটাকেই কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করা সম্ভব।

উদ্বেগ অমূলক কি? ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো গত বছর যে পরিসংখ্যান বের করেছে তার মধ্যে যুক্ত হয়েছে নতুন একটি পরিচ্ছেদ – ''অ্যান্টি-ন্যাশনালদের অপরাধ''। কারা এই ''অ্যান্টি-ন্যাশনাল''? যেমন, 'উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহকারী, নকশাল বা বামপন্থী উগ্রবাদী এবং সন্ত্রাসবাদী (জেহাদি সন্ত্রাসবাদী সহ)'। (সূত্র ২৪) ফলে এখন যে কাউকে ''অ্যান্টি-ন্যাশনাল'' ছাপ্পা মারা যেতে পারে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে, নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন দানা বাঁধার সময় সরকার মিডিয়াগুলিকে এমন খবর সম্প্রচারে নিষেধ করেছে যা কি না ''অ্যান্টি-ন্যাশনাল''। (সূত্র ২৫) উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যারা ''আজাদি'' স্লোগান দেবে, তাদের ''দেশদ্রোহিতা'' আইনে গ্রেপ্তার করা হবে। (সূত্র ২৬) ভীমা-কোরেগাঁও ঘটনায় (যেখানে দলিত সমাবেশের উপর আরএসএস বাহিনী হামলা চালায়) যেভাবে এগারো জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ইউএপিএ আইনে অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে, তাতে সম্ভবত উপরওয়ালার বিরাগভাজন যে কোনও ব্যক্তিকে 'দেশদ্রোহী' কিংবা 'অ্যান্টি-ন্যাশনাল' ছাপ্পা দিয়ে জেলে পচানো যায়। ইতিমধ্যে ভারতীয় কারাগারে মুসলমান, দলিত ও আদিবাসী বন্দির সংখ্যা জনসমষ্টিতে তাদের শতাংশের নিরিখে অনেকটাই বেড়ে গেছে। যেমন, মুসলমান, দলিত, আদিবাসী বন্দি আছে যথাক্রমে ১৯.৭, ২১.৬, ১১.৮ শতাংশ, যদিও জনসমষ্টিতে তারা যথাক্রমে ১৪.২, ১৬.৬, ৮.৬ শতাংশ। (সূত্র ২৭) গত বছর ঝাড়খণ্ডের 'পাতালগড়ি' আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে দশ হাজার আদিবাসীদের বিরুদ্ধে 'দেশদ্রোহী' অভিযোগ আনা হয়েছে। (সূত্র ২৮) এগুলো কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। যেভাবে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে বেছে বেছে সক্রিয়দের ফাটকে আটক করা শুরু হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশ জুড়ে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের চিন্তাটা কোনও অলীক কল্পনা নয়।

তবে, শুধু উপর থেকেই, অর্থাৎ শুধু বিচারব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র, পুলিশি-ব্যবস্থা ও কঠোর আইনকানুনের সাহায্যেই নজরদারি, প্রয়োজনে 'উপযুক্ত' পদক্ষেপ গ্রহণ চলছে না। নীচুতলায়, সঙ্ঘ পরিবারের প্রত্যক্ষ মদতে গড়ে তোলা হয়েছে এক ফ্যাসিবাদী পদাতিক বাহিনী যারা লভ-জেহাদ, গোরক্ষা তথা গোমংস ভক্ষণ, ইত্যাদি নানা 'অভিযোগে' সারা দেশ জুড়ে বিশেষত মুসলমান ও দলিত সম্প্রদায়ের উপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে, প্রয়োজনে ধোলাই-পেটাই করে নিকেশও করে দিচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ স্তব্ধ করার জন্য হামলা চলছে। দাভোলকর-কালবুর্গি-পানেসর-গৌরি লঙ্কেশদের হত্যা করা হয়েছে। তলা থেকে উপর – ফ্যাসিবাদী প্রস্তুতি চলছে বেশ দ্রুত তালে।

প্রসঙ্গক্রমে, সংসদে ইউএপিএ সংশোধনী বিল আনার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন তা স্মরণ করা যেতে পারে। তিনি বলেছেন, ''কোনও প্রতিষ্ঠান নয়, ব্যক্তির মানসিক গঠন সন্ত্রাসবাদের জন্মস্থল। যদি প্রথমেই (নির্দিষ্ট) ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তিদের মতাদর্শগত ও আর্থিক সাহায্য মারফত সন্ত্রাসবাদে আকৃষ্ট করায় নিরস্ত করা যায়, তবে উৎপাত বন্ধ করে দেওয়া যাবে''। (সূত্র ২৯) আসলে শাসকবর্গের কাছে ব্যক্তির ভিন্ন মতাদর্শটাই বড় গোলমেলে, তাদের মস্তিষ্কটা বড় বিপজ্জনক। হিন্দুত্ববাদ ছাড়া আর কোনও মতাদর্শ প্রচার একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। বন্ধ করে দিতে হবে পুঁজিবাদী মতাদর্শ-বিরোধী যে কোনও প্রচার। তাই ইউএপিএ সংশোধনী আইনে এখন শুধু গোষ্ঠী বা দলকে টার্গেট করা হবে না, টার্গেট করা হবে একক ব্যক্তিকেও। অর্থাৎ, ব্যক্তির উপর কড়া নজরদারি উপরওয়ালার কাছে খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।

এই বাস্তবতা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, লকডাউন একদিন উঠে যাবে, কিন্তু করোনা রোগ মানুষের নিত্যসঙ্গী হয়ে থাকবে, যেমন আছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ইত্যাদি বহু সংক্রামক রোগ। ফলে সাধারণ মানুষকে করোনা ভাইরাসের সঙ্গেই ঘর করতে হবে। কিন্তু আরোগ্য সেতু অ্যাপ কি উঠে যাবে? ইতিমধ্যে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের এই অ্যাপ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। (সূত্র ৩০) অবশ্য, অন্যান্য যা ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে তাতে আরোগ্য সেতু অ্যাপ উঠে গেলেও নজরদারি, গোয়েন্দাগিরি, খবরদারির যে কোনও কমতি হবে না তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। 'বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ' ভারত হয়ে উঠছে সর্ববৃহৎ নজরদার রাষ্ট্র!    

সূত্র:

১) ০৮.০৪.২০; https://www.thehindu.com/news/national/about-400-million-workers-in-india-may-sink-into-poverty-un-report/ article31286609.ece ; ২২.০৪.২০-এ সংগৃহীত।

২) ২৪.০৪.২০; আনন্দবাজার পত্রিকা।

৩) সূত্র ১ দ্রষ্টব্য।

৪) ০৯.০৪.২০; https://www.bloombergquint.com/global-economics/virus-crisis-is-a-chance-for-india-to-finally-reform-its- economy ; ২৪.০৪.২০-এ সংগৃহীত।

৫) ২৪.১১.২০১৯; https://www.business-standard.com/article/economy-policy/govt-releases-5-survey-reports-after-uproar-holds- back-study-it-junked-119112300873_1.html; ৩১.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

৬) ০১.১১.২০১৯; https://indianexpress.com/article/business/economy/india-employment-rate-study-azim-premji- university-6097024/; ৩১.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

৭) ১৫.১১.২০১৯; https://scroll.in/latest/943803/consumer-spending-fell-for-first-time-since-1970s-in-2017-18- report-withheld-business-standard; ৩১.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

৮) ০৮.০৫.২০; https://economictimes.indiatimes.com/news/economy/policy/lockdown-hit-industry-demands-suspension- of-labour-laws-for-2-3-yrs/articleshow/75633578.cms?from=mdr; ১০.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

৯) ০৯.০৫.২০; https://www.business-standard.com/article/economy-policy/up-govt-to-exempt-businesses-from-all-but-three- labour-laws-for-3-years-120050701531_1.html; ১০.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

১০) ০৯.০৫.২০; https://timesofindia.indiatimes.com/blogs/toi-editorials/stoking-the-engine-adityanath-shows-the- way-with-labour-reforms/; ০৯.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

১১) ১০.০৫.২০; https://www.bloombergquint.com/opinion/covid-19-and-labour-law-suspension-hit-the-workers-when- they-are-down; ১০.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

১২) ১৪.০৪.২০; https://thediplomat.com/2020/04/covid-19-boosts-indias-growing-surveillance-state/; ১৬.০৪.২০-এ সংগৃহীত।

১৩) সূত্র ১১ দ্রষ্টব্য; ১৭.০৪.২০, https://scroll.in/article/959364/the-aarogya-setu-app-endorsed-by-modi-to-track-covid- 19-cases-could-ramp-up-government-surveillance; ২২.০৪.২০-এ সংগৃহীত;  ০৬.০৫.২০; https://www.groundxero.in/2020/05/06/is-aarogya-setu-a-new-method-to-keep-citizens-under-surveillance/; ১০.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

১৪) ১২.০৫.২০; ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

১৫) সূত্র ১১ দ্রষ্টব্য; ১৩.০৪.২০; https://scroll.in/article/958966/how-indian-states-are-using-surveillance-technology- to-track-covid-19-cases; ১৩.০৪.২০-এ সংগৃহীত;

১৬) ১১.০৫.২০; https://www.hindustantimes.com/india-news/mp-app-to-track-patients-leaks-personal-data-taken-offline/ story-WO7ATpaxOMDTsmUxSKduUO.html; ১১.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

১৭) ০৮.১১.২০১৯; https://www.business-standard.com/article/current-affairs/govt-extends-bidding-deadline-for- facial-recognition-for-the-third-time-119110800605_1.html; ০৯.১১.১৯-এ সংগৃহীত।

১৮) ২৯.১২.২০১৯; https://thewire.in/government/delhi-police-is-now-using-facial-recognition-software- to-screen-habitual-protestors; ৩০.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

১৯) ১২.০৩.২০; https://www.livemint.com/news/india/delhi-violence-govt-using-voter-id-driver-s-license-data-to-screen-rioters- 11583942865054.html; ০৮.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

২০) ০১.১০.২০১৮; https://www.livemint.com/Politics/0LTYZzCHQb9X6UFsn09lBI/Aadhaar-verdict-big-data- meets-big-brother.html; ০৮.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

২১) ১১.০৭.২০১৯; https://www.huffingtonpost.in/entry/aadhaar-fears-coming-true-in-assam_in_5d26956be4b0cfb59600624f; ০৮.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

২২) ১৭.০৩.২০; https://www.huffingtonpost.in/entry/aadhaar-national-social-registry-database-modi_in_5e6f4d3cc5 b6dda30fcd3462?guccounter=1; ২৩.০৩.২০-এ সংগৃহীত।

২৩) ১১.১২.২০১৯; https://indianexpress.com/article/india/govt-agencies-get-wide-powers-to-call-for-personal-data-in- privacy-bill-6160712/; ১৪.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

২৪) ২৩.১০.১৯; https://scroll.in/article/941383/new-national-crime-data-report-contains-baffling-new-category- offences-by-anti-national-elements; ৩১.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

২৫) ১৩.১২.২০১৯; https://scroll.in/article/946488/dissent-is-anti-national-in-modis-india-no-matter-where-it-comes-from; ১৩.১২.১৯-এ সংগৃহীত।

২৬) ০৯.০২.২০; https://www.newsclick.in/azaadiphobia-who-afraid-freedom-why; ১১.০২.২০-এ সংগৃহীত।

২৭) ১২.০২.২০; https://timesofindia.indiatimes.com/india/in-a-minority-but-a-major-presence-in-our-prisons/articleshow/ 73266299.cms; ০৮.০৫.২০-এ সংগৃহীত।

২৮) ১৯.১১.২০১৯; https://scroll.in/article/944116/10000-people-charged-with-sedition-in-one-jharkhand-district-what-does- democracy-mean-here; ১৯.১১.১৯-এ সংগৃহীত।

২৯) ২৯.০৭.২০১৯; https://countercurrents.org/2019/07/uapa-amendment-another-nail-on-the-coffin-of-democracy; ৩০.০৭.১৯-এ সংগৃহীত।

৩০) ০১.০৫.২০; https://thewire.in/government/home-ministry-aarogya-setu-office-workers; ০৮.০৫.২০-এ সংগৃহীত।