‘বিজেপির ডিএনএ’-তে কী আছে?

By : Update Study Group | : 28 March, 2021
‘বিজেপির ডিএনএ’-তে কী আছে?

কয়েক দিন আগে ‘‘বিজেপির গায়ে লেগে থাকা ‘অবাঙালি’ তকমা মুছতে মরিয়া হয়ে’’ নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনী জনসভায় বলেছেন, ‘‘বিজেপির ডিএনএ-তে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আচার, বিচার, ব্যবহার, সংস্কার আছে’’।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন ১৯০৬ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত এবং আবার ১৯২১-১৯২৩ সাল পর্যন্ত। শিক্ষাব্রতী ও আইনবিদ হিসেবে তাঁর নাম বাংলার ইতিহাসে প্রোজ্জ্বল। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯২৪ সালে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর জন্ম ১৯২৫ সালে। অর্থাৎ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী আরএসএস-এর কোনও সম্পর্ক ছিল এমন কথা অবান্তর। আর, ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেল হিন্দুত্ববাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু মহাসভার (যার আনুষ্ঠানিক জন্ম ১৯১৫ সালে) সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। ফলে বিজেপির ডিএনএ-তে আশুতোষের কোনও অবদান খুঁজে পাওয়া গেল না। তবে তাঁর পুত্র শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় – যিনি বিজেপির পূর্বসূরী জন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা – তাঁর সঙ্গে বিজেপির নিকট সম্পর্ক থাকা স্বাভাবিক। অতএব শ্যামাপ্রসাদের ডিএনএ-তে কী ছিল সে ব্যাপারে কৌতুহল চেপে রাখা গেল না।

শ্যামাপ্রসাদ যখন উপাচার্য ছিলেন

শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন বাংলার হিন্দু জমিদার ভদ্রলোক শ্রেণি থেকে উদ্ভূত।তাঁর আদি বাড়ি হুগলির জিরাটে।মেধাবী ছাত্র শ্যামাপ্রসাদ ১৯৩৪-১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনিষ্ঠতম উপাচার্য ছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি বাংলার লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে কংগ্রেস প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু পরের বছর কংগ্রেস কাউন্সিল বয়কট করলে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালে নির্দল সদস্য হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। কংগ্রেস হিন্দুদের স্বার্থ যথাযথভাবে না দেখার প্রতিবাদে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে শ্যামাপ্রসাদ ছাত্রদের সামরিক প্রশিক্ষণে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে তাদের একটি প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। শ্যামাপ্রসাদ ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাকের প্রতি ছাত্রদের অভিবাদন করার নির্দেশ দিলে ছাত্ররা প্রতিবাদে সামিল হয়। ব্রিটিশ পতাকাকে সম্মান না জানানোর ‘অপরাধে’ বিদ্যাসাগর কলেজের একটি ছাত্রকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সঙ্গে বেত্রাঘাত করা হয়। প্রতিবাদে বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্ররা ধর্মঘট ডাকে। ঐ ধর্মঘটে সামিল হওয়ার জন্য শ্যামাপ্রসাদ দু’জন ছাত্রকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করেন। প্রতিবাদে ছাত্ররা বৃহত্তর ধর্মঘটের ডাক দেয়।এইভাবে শ্যামাপ্রসাদ ব্রিটিশ প্রভুদের সন্তুষ্ট করেন।

এই শ্যামাপ্রসাদ ছাত্রদের প্রতি ‘‘শক্তিশালী, স্বনির্ভর, কঠোর পরিশ্রমী, নির্ভীক’’ হয়ে ওঠার আহ্বান রেখে বলেন, তারা যেন ‘‘শ্রেণি ঘৃণায় বা অবুঝ আবেগে’’ চালিত না হয়।বস্তুত, শ্যামাপ্রসাদ সেই সময়ে শুধু ব্রিটিশদেরই স্তাবকতা করেননি, ব্রিটিশ শাসন-শোষণ এবং ভারতীয় জমিদার-বুর্জোয়াদের প্রতি ‘‘শ্রেণি ঘৃণা’’ থেকে দূরে থাকার জন্য ছাত্রদের পরামর্শ দিয়েছিলেন।

বাংলায় হিন্দু মহাসভা মুসলিম লিগের জোট সরকারে শ্যামাপ্রসাদের যোগদান

১৯৩৯ সালে শ্যামাপ্রসাদ হিন্দু সাম্প্রদায়িক দল হিন্দু মহাসভায় যোগ দেন। এক বছরের মধ্যে তিনি বঙ্গীয় হিন্দু মহাসভার সভাপতি এবং সর্ব ভারতীয় হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি পদে অভিষিক্ত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি মহাসভার সর্বভারতীয় সভাপতি হন। ১৯৪০ সালে তিনি বাংলায় ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন সাম্প্রদায়িক মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভার জোট সরকারে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে যোগ দেন। উল্লেখযোগ্য হল, ফজলুল হক তার কিছু আগে লাহোরে মুসলিম লিগের সভায় দ্বিজাতি তত্ত্ব অনুযায়ী ‘পাকিস্তান’ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। অর্থাৎ ‘পাকিস্তান’ প্রস্তাব উত্থাপনকারীর মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে শ্যামাপ্রসাদ তথা হিন্দু মহাসভার বিন্দুমাত্র দ্বিধা হয়নি। ১৯৪২ সাল – যে বছর সমগ্র দেশ উত্তাল ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে ফেটে পড়ে – তখন হিন্দু মহাসভার সভাপতি সাভারকর কানপুর অধিবেশনে বলেন,

ব্যবহারিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও মহাসভা জানে যে আমাদের অবশ্যই যুক্তিসম্মত আপসের মধ্য দিয়ে এগোতে হবে। আপনারা দেখবেন, অতি সাম্প্রতিক কালে সিন্ধে, সিন্ধ হিন্দুসভা আমন্ত্রণ পেয়ে লিগের সঙ্গে হাত মেলানোর মতো দায়িত্বশীল কাজ হাতে নিয়ে জোট সরকার গঠন করেছে। বাংলার কথাও সকলে জানেন। এমনকি লিগের অনুগত কংগ্রেস যেখানে জঙ্গি লিগের সঙ্গে মিটমাট করতে পারেনি, সেই লিগ যখনই হিন্দু মহাসভা ও জোট সরকারের সংস্পর্শে এসেছে, তখনই তারা খুবই যুক্তিসঙ্গতভাবে আপসমুখী ও মিশুকে হয়ে উঠেছে মি. ফজলুল হকের প্রধানমন্ত্রীত্বে এবং আমাদের বিখ্যাত মহাসভা নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সক্ষম নেতৃত্বে…।

প্রকৃতপক্ষে, শুধু সিন্ধ কিংবা বাংলাতেই নয়, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশেও সাভারকর-শ্যামাপ্রসাদ নেতৃত্বাধীন হিন্দু মহাসভা লিগের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে। দুই মেরুর দুই কট্টর সাম্প্রদায়িক দলের মধ্যে জোট তৈরি করতে শ্যামাপ্রসাদ ও সাভারকরের কোনও অসুবিধা হয়নি।

ভারত ছাড়ো আন্দোলন শ্যামাপ্রসাদ

শ্যামাপ্রসাদ যে হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি ছিলেন, সেই সংগঠন কংগ্রেসের অসহযোগ নীতির তীব্র বিরোধী ছিল (কংগ্রেস কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল সে প্রশ্ন না হয় এখানে উহ্য থাকল)। উপরোক্ত কানপুর অধিবেশনেই মহাসভার সভাপতি সাভারকর বলেন,

আমাদের সমস্ত ব্যবহারিক রাজনীতির প্রধান নীতি হল দায়িত্বশীল সহযোগিতা।… [আমরা] বিশ্বাস করি যে সমস্ত হিন্দু সংগঠনবাদীদের, যারা কাউন্সিলর, মন্ত্রী, আইনপ্রণয়নকারী এবং যে কোনও পুরসভা বা কোনও সরকারি সভায় সরকারি ক্ষমতার কেন্দ্রগুলিকে ব্যবহার করার জন্য কাজ করে চলেছে… তারা দেশের প্রতি খুবই দেশপ্রেমিক কাজ করছে।

দেশ জুড়ে ভারত ছাড়ো আন্দোলন যখন ব্যাপক জনগণকে ব্রিটিশ শাসন বিরোধী সংগ্রামে সামিল করেছে, তারা মার খাচ্ছে, গুলি খাচ্ছে, জেলে ঢুকছে, তখন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ বাংলার গভর্নর জন হার্বার্টকে চিঠি লিখে জানান,

এইরকম একটি কঠিন সময়ে গভর্নর হিসেবে আপনার এবং আপনার সহকর্মীদের [মধ্যে] সম্পূর্ণ বোঝাপড়া থাকা উচিত। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।… কংগ্রেসের ডাকা সারা ভারত ব্যাপী আন্দোলনের ফলে এই প্রদেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে আমাকে এখন তার উল্লেখ করতে হবে। [দ্বিতীয় বিশ্ব] যুদ্ধের সময়কালে যদি কেউ গণ-অনুভবকে এমনভাবে নাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা করে যাতে আভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা বা নিরাপত্তাহীনতা ঘটতে পারে, তবে যে কোনও সরকার, তার কার্যক্রমের মেয়াদ যদি স্বল্পকালীনও হয়, তবু সে অবশ্যই এই আন্দোলনকে প্রতিহত করবে।

প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার, যাঁকে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার হিন্দুত্ববাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে মান্যগণ্য করে, তিনি লিখেছেন, শ্যামাপ্রসাদ ‘‘আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে আন্দোলন আভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং যুদ্ধের সময় গণ-অনুভূতিকে উত্তেজিত করে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এবং তিনি মনে করতেন যে, ক্ষমতাসীন যে কোনও সরকারের পক্ষে তাকে দমন করা উচিত…।’’

লিগ-মহাসভার জোট সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ ব্রিটিশ গভর্নরের উদ্দেশে আরও বলেন,

প্রশ্ন হল বাংলায় এই আন্দোলনকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়। এই প্রদেশের প্রশাসনকে এমনভাবে পরিচালিত করা দরকার যে কংগ্রেসের সর্বাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই আন্দোলন যেন প্রদেশে প্রোথিত হতে ব্যর্থ হয়। আমাদের পক্ষে, বিশেষত দায়িত্ববান মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে জনগণের কাছে এটা বলা সম্ভবপর যে, যে-স্বাধীনতার জন্য কংগ্রেস এই আন্দোলন শুরু করেছে তা ইতিমধ্যে জনগণের প্রতিনিধিত্ব পাঠানোর মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে।

উত্তাল ১৯৪০-এর দশকে, যখন ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মতো একের পর এক গণ-আন্দোলন ব্রিটিশ রাজকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তখন শ্যামাপ্রসাদ সেই আন্দোলনকে কীভাবে দমন করা যায়, সেই কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন। এমনকি আইনসভায় প্রতিনিধি পাঠানোর মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এমন কথাও শ্যামাপ্রসাদ বলতে দ্বিধা করেননি। বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের ডিএনএ-তে কেমন ‘দেশপ্রেমিক’ সত্ত্বা নিহিত তা প্রমাণ করার পক্ষে উপরোক্ত উক্তিগুলি যথেষ্ট।

মন্বন্তর শ্যামাপ্রসাদ

১৯৪৩ সালে যে ভয়াবহ পঞ্চাশের মন্বন্তর দেখা দেয়, তাতে ত্রাণ বিলির জন্য শ্যামাপ্রসাদের নেতৃত্বে হিন্দু মহাসভা উদ্যোগ নেয়। একটি পৃথক রিলিফ কমিটি গঠিত হয়। সেই রিলিফ কমিটির ভাণ্ডারে লক্ষ লক্ষ টাকা জমা পড়ে। বিখ্যাত চিত্রকর চিত্তপ্রসাদ সেই সময়ে নানা গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন মন্বন্তরে মানুষের অশেষ দুর্ভোগের পাশে দাঁড়াতে, তাদের কথা লিপিবদ্ধ করতে। তিনি হুগলি জেলার জিরাট ও বলাগড় অঞ্চলে যান। শ্যামাপ্রসাদ তাঁর নিজের গ্রাম ও অঞ্চলে কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা দেখা তাঁর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। কী দেখেছিলেন তিনি?

বলাগড় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তিনি প্রত্যক্ষ করেন বন্যা-বিধ্বস্ত মানুষের অবস্থা। তিনি দেখেন তার আগের বছরে বন্যার তাণ্ডবে কীভাবে একের পর এক গ্রাম বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বেহুলা নদী ভেসে গিয়ে গ্রামের পর গ্রাম পলি মাটিতে ভরে গেছে। মাটির বাড়িগুলো ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। ধানগোলা ভেঙ্গে পড়েছে। ছয়টি গ্রাম বারো দিন ধরে জলের তলায় থাকার ফলে বিধ্বস্ত। সাত হাজার গ্রামবাসী নিঃস্বে পরিণত হয়েছে। বন্যার ফলে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। বলাগড় অঞ্চলের মানুষ বাইরে থেকে আমদানি করা চালের উপর নির্ভরশীল কেননা তাদের জমি তখন চাষের অযোগ্য। কিন্তু সেই চাল আসছে না।

সরকার থেকে পরিবার পিছু ১০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে ঘর মেরামত ও চাল ক্রয়ের জন্য। বলা বাহুল্য, সেই যৎসামান্য টাকা দ্রুত ফুরিয়ে গেছে। আগের বছর বন্যা হলেও পরের বছর দেখা গেছে দেরিতে বৃষ্টি। সম্পন্ন কৃষকরা, যারা পাটের চাষ করতে গিয়েছিল, তারাও জলের অভাবে সর্বস্বান্ত। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজের ব্যাপক অভাব। বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় ভেসে গেলেও আমগাছগুলি অটুট আছে। ক্ষুধার্ত মানুষ আম ও আমের আাঁটি খেয়ে খিদে মেটানোর চেষ্টা করছে। যেখানেই চিত্তপ্রসাদ গেছেন, সেখানেই তিনি দেখেছেন গ্রামগুলির মানুষ কলেরা, বসন্ত, চর্মরোগে আক্রান্ত। রাজাপুর গ্রামের ৫২টি পরিবারের মধ্যে মাত্র ছয়টি পরিবার গ্রামে থেকে গেছে।

অধিকাংশ গ্রামবাসী আশুতোষের ছেলে শ্যামাপ্রসাদের নাম শুনেছেন। কিন্তু তাঁরা শ্যামাপ্রসাদের থেকে ছিটেফোঁটা সাহায্যও পাননি। তাঁরা মহাসভার বেঙ্গল রিলিফ কমিটির নামও শোনেননি। তাঁরা সামান্য আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ফেডারেশন, মুসলিম স্টুডেন্টস লিগের থেকে। শ্যামাপ্রসাদের রিলিফ কমিটি লক্ষ লক্ষ টাকা তুললেও তার কণামাত্র গ্রামগুলিতে ঢোকেনি। চিত্তপ্রসাদ দেখলেন, জিরাটে আশুতোষের পৈত্রিক ভিটে ভগ্নপ্রাপ্ত। কিন্তু তার পাশে শ্যামাপ্রসাদ তৈরি করেছেন প্রাসাদের মতো বাগানবাড়ি। সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে শ্যামাপ্রসাদ বন্ধুবান্ধব সহ সেখানে স্ফূর্তি করে যান।১০

১৯৪৩ সালের ঐ দুর্ভিক্ষ কিন্তু বন্যা, খরা কিংবা অনাবৃষ্টির ফলেই শুধু ঘটেনি। তা মূলত ঘটেছিল ব্রিটিশ সরকারের নীতির কারণে। যুদ্ধে জাপানের কাছে বর্মার পতনের ফলে সেখান থেকে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার উপর যুদ্ধের সৈন্যদের জন্য প্রচুর খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। বাকি খাদ্যশস্য বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বণ্টনে ছিল সরকারের ঘোরতর অনীহা। এর সঙ্গে শুরু হয়েছিল মজুতদারদের কালোবাজারি। খাদ্যের অভাবে গ্রাম থেকে কাতারে কাতারে মানুষ কলকাতায় চলে এল। কিন্তু সেখানেও খাদ্যাভাব। দ্য স্টেটসম্যান কাগজে তার খবর ও ছবি বেরোলে দেশ জুড়ে তো বটেই বিশ্ব জুড়ে সাড়া পড়ে গেল। সরকার থেকে যৎসামান্য ত্রাণের কর্মসূচী গৃহীত হয়েছিল। শ্যামাপ্রসাদের নেতৃত্বে যে বেঙ্গল রিলিফ কমিটি গঠিত হল তারা ত্রাণকেন্দ্র স্থাপন করল বেছে বেছে হিন্দুপ্রধান এলাকায়। মহাসভার কমিটির বক্তব্য ছিল সরকারি ত্রাণ কমিটির রাঁধুনিদের বেশির ভাগ মুসলমান। তাই হিন্দুরা সে খাবার খেতে চাইছে না। মহাসভার নিজস্ব ক্যান্টিনে শুধুমাত্র হিন্দুদের রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হত। অর্থাৎ, ভয়াবহ মন্বন্তরেও শ্যামাপ্রসাদ ও তার দল হিন্দু মহাসভা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দ্বিধা বোধ করেননি।১১ শ্যামাপ্রসাদের এই ঐতিহ্যই বিজেপি বহন করে চলেছে।

বাংলা বিভাগ শ্যামাপ্রসাদ

২০১৬ সালে নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়ম ও লাইব্রেরি এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশন একটি প্রদর্শনী করে। সেখানে শ্যামাপ্রসাদকে বাংলার দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে যোদ্ধা এবং ‘‘বাংলার বিভাজন পরিকল্পনার রূপকার’’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।১২বাংলার বিভাজন প্রসঙ্গে বিস্তৃত আলোচনার পরিসর এখানে নেই। তবে কিছু কথা হতেই পারে।

অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানরা ছিল সংখ্যাগুরু। মহাজন, জমিদারদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিল হিন্দু ভদ্রলোক সম্প্রদায়। সাধারণ চাষি, খেতমজুরদের মধ্যে মুসলমানরা ছিল সংখ্যাধিক্য। সে সময়ে ভোটের অধিকার ছিল খুবই সীমিত। নারীদের কোনও ভোটাধিকার ছিল না। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে অবস্থাপন্ন (যারা সরকারকে ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষমতা রাখত), শিক্ষিত অংশ ভোটাধিকার প্রাপ্ত ছিল। তবে, হিন্দুরা হিন্দুদের ও মুসলমানরা মুসলমানদের নির্বাচিত করত। তা সত্ত্বেও, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত ভাবে এগিয়ে থাকা উচ্চ বর্ণ হিন্দু ভদ্রলোক জমিদার মহাজন ও শিক্ষিত সম্প্রদায় আইনসভা আলোকিত করে থাকত। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের কয়েকটি পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক স্তরে কয়েকটি পরিবর্তন এই সমীকরণকে অনেকখানি ঘেঁটে দিল।

প্রথমত, মুসলমান চাষিদের থেকে একটা অংশ মূলত পাট ও ধান চাষ করে অবস্থাপন্ন জোতদারে পরিণত হল। ফলে নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ বেড়ে গেল। দ্বিতীয়ত, হিন্দু জমিদারবর্গের মধ্যে একটি বড় অংশ ছিল কলকাতা নিবাসী অনুপস্থিত জমিদার। জমিদারির দেখভালের দায়িত্ব তারা যেসব কর্মচারীদের হাতে ছেড়ে দিয়ে এসেছিল, তারা সম্পত্তি নয়ছয় করত। ফলে শহরবাসী জমিদারবর্গের ও তাদের শিক্ষিত সন্তানসন্ততিদের অবস্থা পড়তে থাকল। যারা গ্রামে থেকে জমিদারি দেখত, তারা তাদের অবস্থা অনেকটা বজায় রাখতে পারলেও ১৯২৯ সালের মহা সংকট তাদের অর্থনৈতিক অবস্থায় প্রভাব ফেলেছিল। যাই হোক, বাংলার গ্রাম ও শহরের চাষি-জমিদার-শিক্ষিতদের মধ্যে ভারসাম্যে উল্লেখজনক পরিবর্তন ঘটতে থাকল।১৩

এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩২ সালে নিয়ে এল কম্যুনাল অ্যাওয়ার্ড (বা, সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা)। এর ফলে বাংলায় আইনসভা নির্বাচনে মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করার অনুপাত আগের থেকে বেড়ে গেল। কিন্তু যে হিন্দু ভদ্রলোক সম্প্রদায় এতদিন আইনসভায় সংখ্যাধিক্য ছিল তাদের অনুপাত কমে গেল। তার উপর, ব্রিটিশ প্রশাসন হিন্দুদের মধ্যে ‘ডিপ্রেসড ক্লাস’ বা শূদ্রদের জন্য পৃথক কোটার ব্যবস্থা করল যা আসবে হিন্দু কোটা থেকেই। ফলে বাংলার রাজনৈতিক মঞ্চে আলোড়ন পড়ে গেল। শিক্ষিত ও জমিদার উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা তাদের এতদিনকার প্রতাপ হারানোর সম্ভাবনায় শঙ্কিত ও সক্রিয় হয়ে উঠল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে জাতীয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমগ্র ভারতের প্রেক্ষাপটে ‘কম্যুনাল অ্যাওয়ার্ড’-কে দেখেছিল এবং তাতে সম্মতি দিয়েছিল। বাংলার কংগ্রেস এই নীতির তীব্র প্রতিবাদে সামিল হল। সঙ্গে তারা হিন্দু মহাসভাকেও পেয়ে গেল।

এরপর ১৯৩৫ সালে সম্পাদিত হল গান্ধি-আম্বেদকর পুনা চুক্তি। এর ফলে দলিতদের জন্য আসন সংরক্ষিত হল এবং সেই আসন এল হিন্দুদের ভাগ থেকেই। অর্থাৎ, বাংলায় বর্ণহিন্দুদের প্রতিনিধি সংখ্যা আরও কমে গেল। বাংলার কংগ্রেসের তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেও পুনা চুক্তি বলবৎ থাকল। বাংলার কংগ্রেস ছিল মূলত শিক্ষিত জমিদার হিন্দুদের পার্টি। ফলে সেই কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দের এত প্রতিক্রিয়ার কারণ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কংগ্রেস সঙ্গে পেল হিন্দু মহাসভাকে – যারাও হিন্দু জমিদার, শিক্ষিত এবং অবাঙালি ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করত।

এই পরিস্থিতিতে ভারত ‘স্বাধীন’ হওয়ার সম্ভাবনা এগিয়ে এল। ভারত ভেঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান সৃষ্টির চক্রান্ত ঘনীভূত হল। যে হিন্দু জমিদার শ্রেণি ও শিক্ষিত হিন্দুরা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল হয়েছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম উচ্চ বর্ণ হিন্দু জমিদার ও শিক্ষিতরা এখন বাংলা বিভাগের পক্ষে দাঁড়াল, কেননা সংখ্যাগুরু মুসলমানরা তাদের উপর ছড়ি ঘোরাবে তা ছিল তাদের একেবারেই না-পসন্দ।১৪সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটল। এমনকি মুসলমান চাষি ও খেতমজুরদের জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াইগুলোতে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানো হল।

১৯৪৪ সাল থেকে শ্যামাপ্রসাদ বাংলা বিভাজনের জোরালো প্রবক্তা হয়ে উঠলেন। ১৯৪৭ সালের ২ মে তিনি ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেনকে চিঠি লিখলেন যাতে তিনি বললেন, এমনকি ভারত ঐক্যবদ্ধ থাকলেও যেন বাংলার বিভাজন ঘটে।১৫২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭ থেকে শ্যামাপ্রসাদ বাংলা বিভাজনের পক্ষে যে তীব্র আন্দোলনে নামেন তাতে শরিক ছিল কংগ্রেসও। ১১ মে শ্যামাপ্রসাদ বল্লভভাই প্যাটেলকে চিঠি লিখে জানান, জিন্নার মনোভাব পরিবর্তন হলেও তিনি যে কোনও মূল্যে বাংলা বিভাজন চান।১৬শ্যামাপ্রসাদের বক্তব্য ছিল, বাংলাকে কিছুতেই ‘মুসলমান প্রদেশে’ পরিণত করা চলবে না। বাংলাকে পশ্চিম (প্রধানত হিন্দু) এবং পূর্ব (প্রধানত মুসলমান) – এইভাবে ভেঙ্গে ফেলা হোক।১৭এমনকি সেই সময়ে বাংলার কংগ্রেসের শরৎ চন্দ্র বসু (সুভাষ বসুর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা), কিরণ শঙ্কর রায় এবং বাংলার প্রধানমন্ত্রী হুসেন সুরাবর্দি ঐক্যবদ্ধ অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার পক্ষে দাঁড়ালেও শ্যামাপ্রসাদ তার তীব্র বিরোধিতা করেন। শ্যামাপ্রসাদের কাছে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বাংলা বিভাজনই ছিল পাখির চোখ।১৮বস্তুত, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, বিশেষত প্যাটেলের থেকে শ্যামাপ্রসাদ বিপুল সমর্থন পান। ১৯৪৭ সালের ১১ মে শ্যামাপ্রসাদ প্যাটেলকে চিঠি লিখে জানান, ‘‘আপনি সার্বভৌম বাংলা গঠনের পরিকল্পনার প্রতি কোনও গুরুত্বই দেবেন না।… পাকিস্তান হোক, কি না হোক, আমরা বাংলাকে দুটো প্রদেশে ভাগ করার দাবি করি।’’১৯

সেদিন শুধু বাংলা বিভাজনই হয়নি। বিভাজনের আগে ও পরে যে ভয়াবহ দাঙ্গাহাঙ্গামা পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গকে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল, হাজার হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছিল, লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিটেছাড়া হয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছিল এবং বিভক্ত জনগণের মধ্যে যে দেশবিভাগের আতঙ্ক ও বেদনা-জড়িত স্মৃতি এখনও তাদের তাড়া করে বেড়ায় – তার জন্য শ্যামাপ্রসাদের মতো হিন্দু জমিদার শিক্ষিত ভদ্রলোক শ্রেণির বিশেষ দায়িত্ব আছে। তীব্র সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সেই ‘‘আচার, বিচার, ব্যবহার, সংস্কার’’-এর ঐতিহ্য বিজেপি বহন করে চলেছে। তাই, শ্যামাপ্রসাদের যে ডিএনএ বর্তমানের বিজেপি বহন করে চলেছে তার মধ্যে আছে বাংলাকে বিভক্ত করার চক্রান্ত, রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা, নারীদের ধর্ষণ, লক্ষ লক্ষ মানুষের ক্রন্দন ও অশেষ যন্ত্রণা। সুতরাং শ্যামাপ্রসাদকে যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘‘বাংলার বিভাজন পরিকল্পনার রূপকার’’ আখ্যা দিয়েছে তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অত্যুক্তি নেই।

অন্য একটি প্রশ্ন এখানে উত্থাপন না করলে শ্যামাপ্রসাদের ‘ঐতিহ্য’ স্মরণ অসমাপ্ত থাকবে। ১৯৫১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার যখন হিন্দু কোড বিল এনে হিন্দুদের মধ্যে বহুগামিতা রদ, বিবাহ-বিচ্ছেদের অধিকার, হিন্দু পরিবারের সম্পত্তিতে নারীর অধিকার, ইত্যাদি বলবৎ করতে গিয়েছিল, তখন জনসঙ্ঘের নেতা শ্যামাপ্রসাদ তার তীব্র বিরোধিতা করে বলেছিলেন, এই বিল ‘‘হিন্দু সংস্কৃতির অপূর্ব গঠনশৈলিকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেবে’’।২০ কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে হিন্দু কোড বিলের সমর্থনে মনিকুন্তলা সেনের উদ্যোগে একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় – যখন তাতে সরোজিনি নাইডুর বক্তব্য রাখার কথা – সেই সময়ে শ্যামাপ্রসাদের লোকজন সেই সভা ভণ্ডুল করে দেয়।২১ ইতিহাসে শ্যামাপ্রসাদের ‘অবদান’ কম নয়।

‘স্বাধীনতা’র পর শ্যামাপ্রসাদ কীভাবে আরএসএস-এর সঙ্গে সহযোগিতায় বিজেপির পূর্বসূরী সাম্প্রদায়িক সংগঠন ভারতীয় জনসঙ্ঘ গড়ে তুলেছিলেন, কাশ্মীরকে জবরদস্তি ভারতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন, সে আর এক ইতিহাস।

বাংলার অশেষ দুর্ভোগ হল, সেই শ্যামাপ্রসাদকে এখন মনীষী হিসেবে বাংলার মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সূত্র:

১) আনন্দবাজার পত্রিকা, ২১.০৩.২০২১।

২) গ্রাহাম, বি ডি; শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি অ্যান্ড দ্য কম্যুনালিস্ট অলটারনেটিভ, সাউনডিংস ইন মডার্ন সাউথ এশিয়ান হিস্ট্রি, সম্পা. লো, ডি এ; (ক্যানবেরা: অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৬৮), পৃঃ ৩৩১।

৩) চট্টোপাধ্যায়, গৌতম; ভারতের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস (কলকাতা: মনীষা গ্রন্থালয়, ১৯৭৮)। চট্টোপাধ্যায়, অশোক; ফ্রন্টিয়ার, ১৮ জুলাই, ২০১৯-এ উদ্ধৃত।

৪) চট্টোপাধ্যায়, অনাথবন্ধু; মহাজীবন শ্যামাপ্রসাদ (নিউ দিল্লি: ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট, ২০১৬), পৃঃ ৩৮। চট্টোপাধ্যায়, অশোক; ফ্রন্টিয়ার, ১৮ জুলাই, ২০১৯-এ উদ্ধৃত।

৫) সাভারকর সমগ্র, খঃ ৬, পৃঃ ৪৭৯-৮০; ইসলাম, শামসুল, হিন্দুত্ব: সাভারকর আনমাস্কড (নিউ দিল্লি: মিডিয়া হাউস, ৫ম সংস্করণ), পৃঃ ১১০-এ উদ্ধৃত।

৬) সমগ্র সাভারকর হিন্দু রাষ্ট্র দর্শন, সাভারকর সমগ্র, খঃ ৬, (পুনা: মহারাষ্ট্র প্রান্তিক হিন্দুসভা, ১৯৬৩), পৃঃ ৪৭৪। https://www.newsclick.in/selfless-patriot; ০৭.০৭.২০১৮, সংগৃহীত ১৬.০১.২০২০।

৭) মুখার্জি, শ্যামাপ্রসাদ; লিভস ফ্রম এ ডায়েরি, পৃঃ ১৭৫-৭৬। নুরানি, এ জি; সাভারকর ও হিন্দুত্ব (কলকাতা: ন্যাশন্যাল বুক এজেন্সি, ২০১৭), পৃঃ ৭৫-এ উদ্ধৃত।

৮) মজুমদার, রমেশচন্দ্র; হিস্ট্রি অব মডার্ন বেঙ্গল, খঃ ২, পৃঃ ৩৫০-৫১। https://www.newsclick.in/selfless-patriot; ০৭.০৭.২০১৮, সংগৃহীত ১৬.০১.২০২০।

৯) ইসলাম, শামসুল; ইন্ডিয়ান ফ্রিডম মুভমেন্ট অ্যান্ড আরএসএস (নিউ দিল্লি: ফারোস, ২০১৮), পৃঃ ৪৮-এ উদ্ধৃত।

১০) https://thewire.in/history/painful-sights-chittaprosad-on-bjp-icon-s-p-mookerjees-bengal-village; ০৪.০৭.২০১৬, সংগৃহীত ২৫.০৪.২০২০। গুপ্ত, অভিরূপ; https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20359; ০৭.০২.২০২১, সংগৃহীত ১৫.০২.২০২১।

১১) গুপ্ত, অভিরূপ; https://www.guruchandali.com/comment.php?topic=20359; ০৭.০২.২০২১, সংগৃহীত ১৫.০২.২০২১।

১২) https://thewire.in/politics/search-syama-prasad-mookerjee-true-patriot; ০৭.০৭.২০১৬, সংগৃহীত ১৬.০১.২০২০।

১৩) এই বিষয়ে অত্যন্ত মনোগ্রাহী আলোচনা করেছেন জয়া চ্যাটার্জি, তাঁর ‘বেঙ্গল ডিভাইডেড’ (কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯৪) গ্রন্থে।

১৪) চ্যাটার্জি, জয়া; বেঙ্গল ডিভাইডেড।

১৫) https://scroll.in/article/811727/three-facts-about-bjp-founder-sp-mookerjee-that-a-recent-exhibition-in-delhi-wouldnt-have-revealed; ১৬.০৭.২০১৬, সংগৃহীত ১৬.০১.২০২০।

১৬) চট্টোপাধ্যায়, অশোক; ফ্রন্টিয়ার, ১৮ জুলাই, ২০১৯।

১৭) সূত্র ২, পৃঃ ৩৩৬।

১৮) সূত্র ১৫ দেখুন।

১৯) দে, অমলেন্দু; স্বাধীন বঙ্গভূমি গঠনের পরিকল্পনা: প্রয়াস ও পরিণতি (কলকাতা: রত্না প্রকাশন, ১৯৭৫), পৃঃ ৬৬।

২০) http://archive.indianexpress.com/news/of-reform-and-resistance/453151/0; ০১.০৫.২০০৯, সংগৃহীত ১৬.০১.২০২০।

২১) সেন, মনিকুন্তলা; সেদিনের কথা (কলকাতা: নবপত্র প্রকাশন, বাংলা ১৩৫৯), পৃঃ ২৩৭-২৪০। চট্টোপাধ্যায়, অশোক; ফ্রন্টিয়ার, ১৮ জুলাই, ২০১৯-এ উদ্ধৃত।